পৃথিবীর অনেক দেশে ক্রীড়াসঙ্গীত না থাকলেও বেশ কিছু দেশের ক্রীড়াসঙ্গীত রয়েছে। তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। সেলিমা রহমানের ‘বাংলাদেশের দুরন্ত সন্তান আমরা দুর্বার দুর্জয়’ গানটিকে জাতীয় ক্রীড়া নিয়ন্ত্রণ বোর্ড ক্রীড়াসঙ্গীত হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। আজ জানবো বাংলাদেশের ক্রীড়াসঙ্গীত সম্পর্কিত সকল তথ্য-
বাংলাদেশের দুরন্ত সন্তান আমরা দুর্দম দুর্জয়
ক্রীড়াজগতের শীর্ষে রাখবো আমরা শৌর্যের পরিচয়।
সুন্দর দেহ, সুন্দর মন, বিধাতার সেরা দান
আরো সুন্দর করি ক্রীড়াচর্চায় উন্নত করি মন প্রাণ।
ক্রীড়া দেয় শক্তি, স্বাস্থ্য, অম্লান যৌবন অক্ষয়।
হারি জিতি তবু বিশ্বের সব প্রতিযোগিতার মাঝে
দৃঢ়পণে মোকাবেলা করি উদ্যমহীন হই না যে
গ্রামে শহরে মাঠে ময়দানে এসো সবে খেলা করি।
দেশের স্বার্থে, জাতীর স্বার্থে সুস্থ শরীর গড়ি
বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনে বাংলাদেশের নাম হবে গৌরবময়।
– সেলিমা রহমান
ইতিহাস: ১৯৭৭ সালে জাতীয় প্রেরণা ও খেলোয়াড়ি মনোভাব প্রকাশের জন্য ক্রীড়াসঙ্গীতের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রীড়া নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (বর্তমান জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ)। ক্রীড়া নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের তৎকালীন সচিব এমএ রশিদ ক্রীড়াসঙ্গীতের জন্য ’৭৭ সালের আগস্ট মাসে দুটি ইংরেজি (বাংলাদেশ অবজারভার ও বাংলাদেশ টাইমস) ও দুটি বাংলা (দৈনিক বাংলা ও ইত্তেফাক) পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেন।
ক্রীড়াসঙ্গীত নির্বাচনের জন্য ৫ সদস্যের বিচারক কমিটি করেছিলেন জাতীয় ক্রীড়া নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের তৎকালীন চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। ৫ সদস্যের কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন বাংলাদেশ রেডিও’র প্রোগ্রাম প্ল্যানিংয়ের পরিচালক আলিমউদ্দিন চৌধুরি। বিচারক কমিটির অন্য চার সদস্য হলেন- চলচ্চিত্র নির্মাতা খান আতাউর রহমান, সঙ্গীত পরিচালক খন্দকার নুরুল আলম, মীর আলী মনসুর ও ক্রীড়াজগতের কার্যনির্বাহী সম্পাদক তওফিক আজিজ খান।
৫ জনের এ বিচারক প্যানেল ১৯৭৭ সালের ১৮ নভেম্বর সর্বসম্মতিক্রমে সেলিমা রহমানের ‘বাংলাদেশের দুরন্ত সন্তান আমরা দুর্বার দুর্জয়’ গানটি চূড়ান্ত করে। গানটির জন্য সেলিমা রহমান ৫০০ টাকা পুরস্কার পেয়েছিলেন।
জাতীয় ক্রীড়া নিয়ন্ত্রণ বোর্ড সেলিমা রহমানের এ গানটিকে ক্রীড়াসঙ্গীত হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। গানের সুর দেন খন্দকার নুরুল আলম। ১৯৭৮ সালের ১৯-২২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সফর করেন কিংবদন্তী ক্রীড়াবিদ মোহাম্মদ আলী। তার আগমন উপলক্ষ্যে বাংলাদেশে ক্রীড়াসঙ্গীত প্রথমবার বাজানো হয়।
♦ বাংলাদেশের ক্রীড়াসঙ্গীতের রচয়িতা কে?
— সেলিমা রহমান।
♦ বাংলাদেশের ক্রীড়াসঙ্গীতের সুরকার কে?
— খন্দকার নূরুল আলম।
♦ বাংলাদেশের ক্রীড়াসঙ্গীত কত চরণ বিশিষ্ট?
— ১০ চরণ।
♦ বাংলাদেশের ক্রীড়াসঙ্গীতের প্রথম চরণটি কী?
— বাংলাদেশের দুরন্ত সন্তান আমরা দুর্দম দুর্জয়।
♦ বাংলাদেশের ক্রীড়াসঙ্গীতের শেষ চরণটি কী?
— ‘বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনে বাংলাদেশের নাম হবে গৌরবময়’।